টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ি এলাকায় ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর তীব্র স্রোতে বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) পৌরশহরের উত্তর গড়কান্দা ও আড়াইআনী বাজার প্লাবিত হয়েছে।
গড়কান্দা বাগানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। পাহাড়ি ঢলে ভোগাই নদীর বাঁধে দুই জায়গায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। চেল্লাখালী নদীর দুটি মিনি ব্রিজ ভেঙে গেছে। সেইসঙ্গে আমন বীজতলা ও সদ্য রোপিত আউশ ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে অনেক পুকুরের মাছ। ভাঙন এলাকায় পানি ঢুকে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত টানা ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ফলে উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বেড়ে ৩.৭৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তর গড়কান্দা (বাস স্ট্যান্ড) এলাকায় নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। গত বছরের ভাঙন স্থানে স্থায়ী কোনও বাঁধ নির্মিত না হওয়ায় সেখান দিয়েই পানি গড়িয়ে শহরের উত্তর গড়কান্দা মহল্লা প্লাবিত হয়েছে।
আড়াইআনী বাজারের নিজপাড়া ও সরকারি খাদ্য গুদামের পাশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি চেল্লাখালী নদীতে প্রবল স্রোতে পাহাড়ি ঢল নেমে নদীর ওপর নির্মিত পলাশিকুড়া ও আমবাগান বেকিকুড়া এলাকার টানা স্টিলের মিনি ব্রিজ ভেঙে গেছে। উপজেলার নয়াবিল, বাঘবের, কলসপাড়, যোগানিয়া ও মরিচপুরান ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় রান্না করতে পারেনি অনেক পরিবার।
নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, প্রায় ২০ হেক্টর আমন বীজতলা ও ১০০ হেক্টর সদ্য রোপিত আউশ ধানের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা প্রণয়নের জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাহাড়ি ঢলে উপজেলার প্লাবিত এবং ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। জরুরি ভিত্তিতে এসব ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ পানিবন্দি মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হবে।