বাংলাদেশকে অল্প রানে বেঁধে হাসি মুখেই ড্রেসিং রুমে ফিরেছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নামতেই তাদের হাসি উধাও!
বাংলাদেশের বোলাররা একটি করে ওভার শেষ করেন, আর ড্রেসিং রুমের অজি ক্রিকেটারদের হাসি মুখগুলো কালো হতে থাকে। বাংলাদেশের কাছে হেরে যাচ্ছেন, এটা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না অস্ট্রেলিয়ানরা। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে বড় অনেক দলের বিপক্ষে জয়হীন বাংলাদেশ, তার মধ্যে ছিল অস্ট্রেলিয়াও। অবশেষে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর আনন্দে মাতলো লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে ভেঙে পড়ে অজিদের ব্যাটিং লাইনআপ। আর তাতেই ২৩ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ হাসিমুখে শুরু করে স্বাগতিকরা। জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণে করমর্দন করেনি অস্ট্রেলিয়া। তবে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমের কাছে গিয়ে হাততালির মাধ্যমে বাংলাদেশকে ঠিকই শুভেচ্ছা জানিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়া।
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যাত্রা শুরু বাংলাদেশের। এরপর কেটে গেছে ১৫ বছর। এতো বছরে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে চারবার মুখোমুখি হলেও দ্বিপাক্ষিক সিরিজে এবারই প্রথম দেখা। বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়, এই অজুহাতে খেলতে চায় না অস্ট্রেলিয়া। এমনকি ভবিষ্যৎ সফরসূচিতে থাকা ম্যাচগুলোও নানা অজুহাতে অনেক সময় বাতিল করে দেওয়ার ইতিহাসও আছে তাদের। সব মিলিয়ে তাই অস্ট্রেলিয়াকে হারানো বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিরও বটে।
আইসিসির ইভেন্ট- বিশ্বকাপ না থাকলে এতোদিনে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের মুখোমুখি হওয়ার সংখ্যা থাকতো শূন্য! কেননা ২০০৭, ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৬ সালের বিশ্বকাপ ইভেন্টেই কেবল অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে পেরেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। অবশ্য বিশ্বকাপের সব ম্যাচেই হতাশাজনক পারফরম্যান্স ছিল। এর মধ্যে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত ২০১৬ সালের বিশ্বকাপেই খানিকটা ভালো পারফরম্যান্স এসেছে। ওই ম্যাচে ভালো ব্যাটিংয়ের পরও ৩ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ।
আজ (মঙ্গলবার) আগের সব হতাশা ভুলিয়ে দিয়ে হাসি মুখে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। এদিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে কোনও সুযোগই দেয়নি স্বাগতিকরা।
মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও তামিম ইকবালকে হারিয়ে এমনিতেই খর্বশক্তির দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে এই তিন ক্রিকেটারের অভাব ফুটে উঠলেও বোলাররা তাদের কাজ ঠিকমতোই করেছেন। শুরু থেকেই স্পিনারদের দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। দুই প্রান্ত থেকে মেহেদী হাসান ও নাসুম আহমেদ চেপে ধরেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের। ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া অস্ট্রেলিয়া ‘গর্ত’ থেকে আর বের হতে পারেনি। ছয় বোলারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে মাত্র ১০৮ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা।