Home Health করোনা চিকিৎসায় ওষুধের নতুন ‘টার্গেট’ খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা

করোনা চিকিৎসায় ওষুধের নতুন ‘টার্গেট’ খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা

114
0

সার্স-কভ-২ বা করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে এমন ওষুধের জন্য একটি নতুন টার্গেট (নভেল টার্গেট) চিহ্নিত করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এটির কারণেই কোভিড-১৯ রোগ হয়। এমনকি ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতেও এটি সহযোগিতা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য পরবর্তী মহামারির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের মাইক্রোবায়োলজি-ইমিউনোলজির অধ্যাপক কারলা সাটশেল বলেন, ঈশ্বর না করুন, কিন্তু আমাদের প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।

এই গবেষণা দলটি এর আগে ভাইরাস প্রোটিনের একটি স্ট্রাকচার ম্যাপড করেছিলেন। যাকে বলা হয় এনএসপি১৬, সব করোনাভাইরাসে এটির উপস্থিতি রয়েছে।

এই গবেষণার প্রতিবেদন সায়েন্স সিগন্যালিং নামের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে যা ভবিষ্যতে নতুন করোনাভাইরাসসহ সার্স-কভ-২ এর চিকিৎসায় ওষুধ উৎপাদনে কাজে লাগবে।

সাটশেল বলেন, করোনা মহামারি এবং ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওষুধ আবিষ্কারে নতুন পন্থার প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি।

ভবিষ্যতের এই ওষুধের মূল ধারণা হলো সংক্রমণের শুরুতেই এটি কাজ করবে।

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, কেউ যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে ফার্মেসিতে গিয়েই ওষুধ কিনতে পারবে। তিন বা চারদিন তা সেবন করবে। অসুস্থ হলে ওষুধ খাওয়ার পর অনেকটাই সুস্থবোধ হবে।

এই গবেষকরা করোনাভাইরাসের তিনটি নতুন প্রোটিন স্ট্রাকচার ম্যাপড করেছেন থ্রি-ডাইমেনশনাল ভিউয়ে এবং একটি গোপন শনাক্তকারীর (আইডেন্টিফাইয়ার) সন্ধান পেয়েছেন যা মানবদেহের ইউমিউন ব্যবস্থা থেকে ভাইরাসকে লুকাতে সহযোগিতা করে। তারা এনএসপি১৬ প্রোটিনে করোনাভাইরাস নির্দিষ্ট একটি পকেট পেয়েছেন। যা ভাইরাসের জেনোমিক খণ্ডকে একটি ধাতব আয়ন দ্বারা ধরে রাখে। এই খণ্ডকে করোনাভাইরাস ভাইরাল বিল্ডিং ব্লকের জন্য টেমপ্লেট হিসেবে ব্যবহার করে।

গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এই প্রোটিন ব্যবহার বন্ধ করতে এই পকেটের সঙ্গে খাপ খায় এমন একটি ওষুধ তৈরির সম্ভাব্যতা রয়েছে। মানবদেহে একই ধরনের, কিন্তু এই পকেট নেই এমন কোষ নিষ্ক্রিয় করবে না এই ওষুধটি।

এনএসপি১৬-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাল প্রোটিন হিসেবে মনে করা হয় যা কোনও একটি আক্রান্ত হওয়ার পর পরই ভাইরাসকে ঠেকাতে ওষুধের মাধ্যমে বাধা দেওয়া সম্ভব।

গবেষকরা বলছেন, তাদের লক্ষ্য হলো মানুষ খুব অসুস্থ হওয়ার আগেই সংক্রমণের শুরুতে ভাইরাসকে থামিয়ে দেওয়া। তারা এই প্রোটিন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটনে কাজ করছেন। একই সঙ্গে তারা রসায়নবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন যারা এই তথ্য প্রোটিনের বিরুদ্ধে ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগাবেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কয়েকটি করোনাভাইরাসের প্রোটিনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। তবে এনএসপি১৬ সবগুলোতে প্রায় একইরকম। করোনাভাইরাসের সব সদস্যের মধ্যে গবেষকদের সন্ধান পাওয়া পকেটটির উপস্থিতি রয়েছে। এর অর্থ হলো এই পকেটকে লক্ষ্য করে যদি কোনও ওষুধ তৈরি হয় তাহলে সব করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তা কাজ করবে। এমনকি ভবিষ্যতে যদি নতুন কোনও করোনাভাইরাসও দেখা দেয়।

গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সাধারণ ঠান্ডার বিরুদ্ধেও কাজ করবে এই ওষুধ। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ভাবিত ওষুধটি রোগ দেখা দেওয়ার শুরুতে রোগীর চিকিৎসায় যে কোনও ককটেলের অংশ হতে পারে। ককটেলে অন্যান্য ওষুধের মধ্যে থাকতে পারে রেমডেসিভিরের মতো ওষুধ। যা ভাইরাসকে বিল্ডিং ব্লকের জন্য টেমপ্লেট উৎপাদনে বাধা দেয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here