নাইজেরিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের নেতা আবুবকর শিকাও আত্মহত্যা করেছেন বলে অডিও বার্তায় জানিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বি অপর একটি গোষ্ঠী। বার্তা সংস্থাগুলোর হাতে আসা অডিও রেকর্ডিংয়ে ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রোভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) জানিয়েছে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের পরে বিস্ফোরক দিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন শিকাও। তবে বোকো হারাম বা নাইজেরিয়ার সরকার কেউই এই খবর নিশ্চিত করেনি।
২০০৯ সালে পুলিশ হেফাজতে বোকো হারামের তৎকালীন নেতার মৃত্যুর পর গোষ্ঠীটির নতুন নেতৃত্ব নেন আবুবকর শিকাও। আন্ডারগ্রাউন্ড গ্রুপ থেকে তিনি বোকো হারামকে গড়ে তোলেন প্রাণঘাতী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হিসেবে। দখলে নিয়ে নেন উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ার বিস্তৃত এলাকা।
শিকাও এর নেতৃত্বে বোকো হারাম বোমা হামলা, অপহরণ এবং কারাগারে হামলা চালিয়ে বন্দিদের মুক্ত করতে থাকে। ২০১৪ সাল থেকে গোষ্ঠীটি শহর এলাকায় হামলা চালানোর মাধ্যমে শরিয়াহ আইনের ভিত্তিতে একটি ইসলামিক স্টেট গঠনের প্রচেষ্টা শুরু করে। ৪০ এর কোঠায় থাকা শিকাও এর ভিডিও বার্তাগুলো ওসামা বিন লাদেনের মতো বলে অনেকেই তুলনা করে থাকেন।
আবুবকর শিকাও বোকো হারামের নেতৃত্ব নেওয়ার পর থেকে ৩০ হাজারের মানুষ নিহত এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০১৪ সালে বর্নিও রাজ্যের স্কুল থেকে শত শত মেয়ে শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর গোষ্ঠীটি মনোযোগ আকর্ষণ করে। তার কিছুদিন পর যুক্তরাষ্ট্র শিকাও বিশ্ব সন্ত্রাসী আখ্যা দেয় আর তার মাথার মূল্য ৭০ লাখ ডলার ঘোষণা করে। শিকাও এর কর্মসূচি এতো বেশি উগ্রবাদী ছিলো যে তাকে ইসলামিক স্টেটও প্রত্যাখ্যান করে। বোকো হারাম ভেঙে ২০১৬ সালে গঠিত হয় ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রোভিন্স (আইএসডব্লিউএপি)।
বার্তা সংস্থাগুলোর হাতে আসা অডিও বার্তাটি আইএসডব্লিউএপি নেতা আবু মুসার আল বার্নাওয়ির বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বলা হয়েছে, শিকাও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেকে হত্যা করেছেন। তিনি বলেন, আইএসডব্লিউএপি যোদ্ধারা এই যুদ্ধবাজকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলো আর তাকে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
গত মাসেও এক সংঘর্ষের সময় আবুবকর শিকাওয়ের মৃত্যুর খবর চাউর হয়। ওই সময়ে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী খবরটি খতিয়ে দেখার কথা জানায়। নতুন অডিও বার্তা ছড়িয়ে পড়ার পরও সেনা মুখপাত্র বিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইয়েরিমার জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ার আগ পর্যন্ত সরকার কোনও বিবৃতি দেবে না।