মারাত্মক ত্বকের ক্যান্সার মেলানোমায় প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়ায় ১৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়। তবে এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির সেন্টেনারি ইনস্টিটিউটের প্রাপ্ত গবেষণায় দেখা গেছে যে নতুন একটি ডুয়েল ড্রাগ মেলানোমা চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
মেলানোমা নিয়ে গবেষণা করা দলের প্রধান গবেষক ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির সেন্টেনারি ইনস্টিটিউটের মেলানোমা ইমিউনোলজি এন্ড অনকোলজি বিভাগের পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো ডঃ আব্দুল্লাহ আল ইমরান জানাচ্ছেন ত্বকের ক্যান্সার মেলানোমা এবং এর সম্ভাব্য প্রতিকার নিয়ে।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- অস্ট্রেলিয়ার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে আল্ট্রা-ভায়োলেট (ইউ-ভি বা অতি বেগুনী) রশ্মির প্রভাবে মারাত্মক ত্বকের ক্যান্সার মেলানোমার প্রকোপ অনেক বেশি।
- অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবছর ১৭০০-এরও বেশি মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ত্বকের ক্যান্সার মেলানোমা।
- মেলানোমা চিকিৎসায় বাংলাদেশি গবেষক ডঃ ইমরান ও তার টিম উদ্ভাবন করেছে ‘ডুয়েল ড্রাগ’ প্রদ্ধতির।
চর্ম-চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অফ ইনভেস্টিগেটিভ ডার্মাটোলজির’ এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে মেলানোমা রোগীদের মধ্যে যারা বর্তমান থেরাপিউটিক চিকিৎসার পক্ষে অনুকূল সাড়া দেয় না, তাদের এই ‘ডুয়েল ড্রাগ’ পদ্ধতির চিকিৎসায় উপকারের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই গবেষণা দলের মূল গবেষক ডঃ ইমরান বলেন, তাদের গবেষণা দলটি আবিষ্কার করেছে যে সেলুলার পরীক্ষাগুলোতে দুটি নির্দিষ্ট প্রোটিনকে লক্ষ্য করে ইনহিবিটরগুলোর (প্রতিরোধক) সম্মিলিত ব্যবহার মেলানোমার বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে এবং এজন্য তারা ইঁদুরের মডেলগুলো ব্যবহার করেছেন।
তিনি বলেন, ” যে দুটি প্রোটিন টার্গেট করা হয়েছে সেগুলো হলো ব্রোমোডোমাইন এবং এক্সট্রা-টার্মিনাল ডোমেইন (বি-ই-টি) প্রোটিন পরিবার এবং সাইক্লিন ডিপেন্ডেন্ট কিনাসি 9 (সি-ডি-কে 9)।”
“বি-ই-টি এবং সি-ডি-কে 9 প্রোটিনগুলোর উচ্চমাত্রার প্রকাশ মেলানোমা রোগীদের রোগ নির্ণয়ের সাথে সম্পর্কিত এবং এগুলো মেলানোমা সেলুলার ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে” ডঃ ইমরান বলেন।
ডঃ আবদুল্লাহ আল ইমরানের মতে, গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, বি-ই-টি এবং সি-ডি-কে 9 ইনহিবিটরগুলো (প্রতিরোধক) একসাথে ব্যবহার করলে অত্যন্ত সফলতার সাথে মেলানোমা কোষগুলো মেরে ফেলতে পারে। কিন্তু এগুলো যখন আলাদাভাবে প্রয়োগ করা হয় তখন তার ফল ততটা কার্যকর হয় না।
তিনি বলেন, “সমস্ত মেলানোমা রোগীর অর্ধেকেরও বেশি বর্তমানের থেরাপিতে সাড়া দেয় না এবং তখন জরুরীভাবে নতুন চিকিৎসার পদ্ধতির প্রয়োজন হয়।”
এই গবেষণা বিষয়ে একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র গবেষক ডঃ জেসামি টিফেন সেন্টেনারি ইনস্টিটিউটের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “আমরা দেখেছি যে মেলানোমা কোষগুলো মেরে ফেলতে ওষুধগুলো যখন একত্রে প্রয়োগ করা হয় তখন এটি সিনারজিস্টিক প্রভাব তৈরি করতে সক্ষম হয়। এই পদ্ধতিটি রোগীদের পক্ষে বেঁচে থাকার হারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
“তাই আমরা গবেষণার এই দারুন ফলাফলের ভিত্তিতে আরও অধিকতর অনুসন্ধান চালিয়ে যাবো।” বলেন ডঃ টিফেন।