অস্ট্রেলিয়ায় মৃত্যু ও ডিজেবিলিটির অন্যতম বড় কারণ হলো স্ট্রোক। প্রায় ৭৭০,০০০ জন অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ডিজেবল অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এতে শুধু বয়স্ক ব্যক্তিরাই আক্রান্ত হয়ে থাকেন বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে, সেটা দূর করতে মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে চাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ইউনিভার্সিটি থেকে ডাবল ডিগ্রি করার পর, ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন স্টেফানি হো। এটা ছিল তার স্বপ্ন। কিন্তু, তখন তার স্ট্রোক হয়।
প্রাথমিকভাবে তিনি ভেবেছিলেন, তিনি ড্রিঙ্ক-স্পাইকিংয়ের শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ, তার অজান্তেই তার ড্রিঙ্কের সঙ্গে কোনো নেশা-জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্ট্রোক ফাউন্ডেশনের একজন একজিকিউটিভ ডাইরেক্টর, লিসা মার্ফি বলেন, স্টেফানির স্ট্রোকের ঘটনা থেকে এর বয়স-সীমার ব্যাপ্তিটা বোঝা যায়।
স্ট্রোকের ঝুঁকির পেছনে বহু কারণ রয়েছে। যেমন, উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, শারীরিক সক্রিয়তার অভাব এবং বাজে খাদ্যাভ্যাস।
স্ট্রোকের লক্ষণগুলো সনাক্ত করার জন্য, এই ফাউন্ডেশনটি অস্ট্রেলিয়ানদেরকে উৎসাহিত করছে F-A-S-T মেসেজটি শেয়ার করতে। এফ মানে ফেস, অর্থাৎ, রোগীর চেহারার দিকে লক্ষ রাখতে হবে। চেহারা ঝুলে যাচ্ছে কিনা। এ হচ্ছে আর্ম বা বাহু। রোগীকে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে, তিনি দু’হাত উপরে তুলতে পারছেন কিনা। এস হচ্ছে স্পিচ। কথা অস্পষ্ট কিংবা কথা আটকে যাচ্ছে কিনা দেখতে হবে। আর, টি হচ্ছে টাইম বা সময়। স্ট্রোক হওয়ার পর সময় নষ্ট করা যাবে না, তৎক্ষণাৎ ইমার্জেন্সি কল করতে হবে।
স্ট্রোক করার আগেই স্মার্টফোন এখন হৃদরোগ ইস্যু শনাক্ত করতে পারবে স্ট্রোক হওয়ার পর স্টেফানি তিন মাস হাসপাতালে ছিলেন। তখন তার মাথায় বড় ধরনের সার্জারি করা হয়। এরপর, হাঁটা, কথা বলা এবং পড়ার মতো সাধারণ বিষয়গুলোও তাকে নতুন করে শিখতে হয়।
আর, স্ট্রোক হওয়ার দশ বছর পরে তিনি স্থায়ীভাবে ডিজেবল হয়ে পড়েন। তিনি তার ডান হাতে কোনো কাজ করতে পারেন না।
এছাড়া, ক্রনিক পেইন, অবসাদ এবং শারীরিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন তিনি। তবে, তিনি বলেন, এগুলো হলো স্ট্রোকের শারীরিক প্রভাব মাত্র।
তার শারীরিক কর্ম-ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তার উন্নতি দেখে ডাক্তাররা আশ্চর্য হন।
স্ট্রোক হওয়ার সময়ে তার পরিবার সাথেই ছিল। সেটা তার জন্য উপকারী সাব্যস্ত হয়েছে। কারণ, স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর যদি সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু করা না হয়, তাহলে প্রতি মিনিটে সেই রোগী ১.৯ মিলিয়ন বা ১৯ লাখ করে ব্রেনের সেল হারান।