রবিবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে আসছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছেন। নগরীকে নান্দনিক রূপ দিতে কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রামজুড়ে চলছে মাইকিং। দল বেঁধে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে লিফলেট, ব্যানার, তোরণ ও পোস্টারে চেয়ে গেছে পুরো নগরী। প্রস্তুত হয়েছে নৌকার আদলে জনসভার মঞ্চ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বার্তা লোকজনের কাছে পৌঁছাতে শনিবারও (৩ ডিসেম্বর) চালানো হচ্ছে বর্ণাঢ্য প্রচার-প্রচারণা। যার মধ্যে রয়েছে ঘোড়ার গাড়িতে করে লিফলেট বিতরণ, নৌকার আদলে গাড়ি বানিয়ে প্রচারণা, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, বাইসাইকেল শোভাযাত্রা, প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে র্যালি।জনসভাস্থলে আসতে প্রতিটি উপজেলায় বাস, মাইক্রোবাস ও ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন বুকিং দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে আসছেন। এ কারণে চট্টগ্রামবাসীর মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রামজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দীর্ঘ ১০ বছর পর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে জনসভায় ভাষণ দেবেন। এতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও স্থানীয় ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন। জনসভাকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে পুরো চট্টগ্রাম প্রস্তুত। আগামীকাল শুধু জনসভাস্থলেই জনসমুদ্র হবে তা নয়, পুরো চট্টগ্রাম হবে লোকে লোকারণ্য। এ জনসভার মধ্যে দিয়ে বিজয়ের মাসে চট্টগ্রাম আরও একটি ইতিহাস সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে থাকবে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। জনসভাস্থল ও আশপাশে প্রায় সাড়ে সাত হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। জনসভাকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘জনসভাকে ঘিরে নগরীকে নান্দনিক হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অনেক কাজ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জনসভাস্থল এবং আশপাশে ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ, যেটির দৈর্ঘ্য ৮৮ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট। মূল মঞ্চের সামনে থাকবে ১৬০ মিটার লম্বা একটি নৌকা। এই মঞ্চে একসঙ্গে ২০০ অতিথি বসতে পারবেন। সমাবেশস্থল ছাড়াও নিউমার্কেট, কদমতলী, সিআরবি ও টাইগারপাসসহ আশপাশের এলাকায় থাকবে ৩০০ মাইক।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর পলোগ্রাউন্ড মাঠে সমাবেশ করেছিল বিএনপি। এই সমাবেশে বিপুল জনসমাগম হয়। তবে বিএনপির জনসভার চেয়ে বেশি লোক সমাগম ঘটাতে চায় আওয়ামী লীগ। ২০১২ সালের ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ড মাঠে সর্বশেষ জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই মাঠে তিনি আবারও ভাষণ দেবেন।