জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ক গৃহীত রেজুলেশনে গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৮ জুন) পাস হওয়া ওই রেজুলেশনে দেশটির গণতান্ত্রিক সমস্যা, জরুরি অবস্থা, রাজনৈতিক বন্দী, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও আসিয়ানের কেন্দ্রীয় ভূমিকার প্রতি নজর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রেজুলেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ে যথাযথ নজর দেওয়া হয়নি এবং কীভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যাবে সে ব্যাপারেও কিছু বলা হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বৈঠকে রেজুলেশনের উপরে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা যা আশা করেছিলাম, এটি তার থেকে কম এবং এই রেজুলেশন একটি ভুল বার্তা দেবে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি ব্যর্থ হয়, তবে মিয়ানমার কোনও ধরনের দায়বদ্ধতা অনুভব করবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রেজুলেশনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে কোনও সুপারিশ করা হয়নি। তাদের ফেরত যাওয়ার জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার কথা এবং এই সমস্যা তৈরির মূল কারণের বিষয়েও কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এইসব বিষয় বিবেচনা করে রেজুলেশনের ভোটের সময় বাংলাদেশ অনুপস্থিত ছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, ওআইসি, আসিয়ান ও সার্কভুক্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশও ভোটদানে বিরত ছিল।
রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার পরে অনেক দেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দিয়েছেন এবং তারা সবাই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ আরও কয়েকটি দেশ রেজুলেশনটি প্রস্তাব করে এবং এর পক্ষে ১১৯টি সদস্য রাষ্ট্র ভোট দেয়। একমাত্র দেশ হিসেবে বেলারুশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় এবং বাংলাদেশ, ভারত, চীন, নেপাল, রাশিয়া ও থাইল্যান্ডসহ ৩৬টি দেশ এতে ভোটদানে বিরত থাকে।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রস্তাবে সাধারণত দেশটির নিজের ভোট বিপক্ষে দেওয়ার কথা থাকলেও জাতিসংঘে দেশটির স্থায়ী প্রতিনিধি কাইউ মোয়ে তুন পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। মূলত তিনিই দেশটির সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।
আসিয়ানের সঙ্গে আলোচনা করে এই রেজুলেশনটি প্রস্তাব করা হয় এবং সম্প্রতি আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যে পাঁচ দফা প্রস্তাব সবাই মেনে নিয়েছিল সেটিকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের এই রেজুলেশন।