যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সিনেটের অভিশংসন বিচার সম্পন্ন হয়েছে। বিচারে গতকাল শনিবার ৫৭-৪৩ ভোটে দায়মুক্তি পেয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও বিবিসির খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
কোনো প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন বিচারে দোষী সাব্যস্ত করতে দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ মোট একশ সিনেটরের মধ্যে ৬৭ জনের ভোট দরকার পড়ে। কিন্তু, গতকালের ভোটে ৫০ জন ডেমোক্রেটিক দলীয় সিনেটর এবং ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান থেকে সাতজন সিনেটর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহে উসকানির অভিযোগে অভিশংসনের পক্ষে রায় দেন।
গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব-হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহে উসকানির অভিযোগ আনা হয়। এ অভিযোগে নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়। পরে তা সিনেটের চূড়ান্ত বিচার পর্যন্ত নেন ডেমোক্র্যাটরা।
এটা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অভিশংসন। এর আগেরবারও হাউসে অভিশংসন পাস হয় এবং সিনেটে গিয়ে তা আটকে যায়। অভিশংসনের লক্ষ্য থাকে ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে সরানো। কিন্তু প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট অভিশংসন বিচারের মুখোমুখি হলেন। সিনেটে দোষী সাব্যস্ত হলে হয়তো আর কখনো প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারতেন না ট্রাম্প।
সিনেটের রায়ের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প একে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন।
অভিশংসনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককনেল। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট না থাকা অবস্থায় কারো বিরুদ্ধে অভিশংসন বিচার অসাংবিধানিক। তবে সিনেটে ট্রাম্প পার পেয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন বলে জানালেন মিচ ম্যাককনেল।
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগের ধারাবাহিকতায় ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট গণনা ও ৩ নভেম্বরের ফল প্রত্যয়নের দিন বিপুল ট্রাম্প সমর্থক সেখানে হামলা চালায়। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমর্থকদেরকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
ফল বাতিলে আদালতে বহু চেষ্টাও করা হয় রিপাবলিকান দলের পক্ষ থেকে। একে একে সব আদালত অভিযোগ নাকচ করে দেন।