দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। অতিমারি পরিস্থিতি চরমে ওঠার সময় বিভিন্ন রাজ্যেই চিকিৎসা পরিষেবার অপ্রতুলতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কোভিডের গ্রাসে সম্প্রতি নিজের ছেলেকে হারিয়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জওয়ান। উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা ওই সেনাকর্মীর আক্ষেপ, ‘‘আমি জাতির সেবা করেছি। কিন্তু দেশের ব্যবস্থাপনা আমার ছেলেকে বাঁচাতে পারল না।’’
ভারতীয় সেনার প্রাক্তন সুবেদার মেজরের নাম হরিরাম দুবে। উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা কার্গিল যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। কোভিডে প্রাণ হারানো ৩১ বছরের ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে চড়া রোদে কানপুরের হ্যালেট হাসপাতালের মর্গের বাইরে অপেক্ষা করেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সেখানেই শোকাতুর হরিরাম এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘১৯৮১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মাতৃভূমির সেবা করেছি। কার্গিল থেকে বারামুল্লা, লাদাখ থেকে লুকুং সব জায়গায় কাজ করেছি। বারামুল্লাকে জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্ত করেছিলাম। কার্গিলে পাকিস্তানের সঙ্গেও যুদ্ধ করেছি। কিন্তু দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আমার ছেলে অমিতাভকে বাঁচাতে পারল না।’’
একই আক্ষেপ শোনা গিয়েছে সিআরপিএফের প্রাক্তন সহকারী কম্যান্ড্যান্ট চন্দ্রপালের গলাতেও। কানপুরের বাসিন্দা চন্দ্রপালের বোন মারা গিয়েছেন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে। বোন মারা যাওয়ার পর ওয়ার্ড বয় এসে তাঁকে মৃত্যুর খবর দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ২২ এপ্রিল ভর্তি হওয়ার পর কেউ তাঁর বোনের খবর দেয়নি বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেছেন, ‘‘২২ এপ্রিল হ্যালেট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আমি সারা জীবন শ্রীনগরে কাজ করেছি। কিন্তু কেউ আমার বোনের যত্ন করেনি। যত্নের জন্য হাসপাতাল কর্মীকে টাকা দিয়েছি। কিন্তু কোনও খবর পায়নি। আজ মৃত্যু সংবাদ পেলাম।’’ এর পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন সিআরপিএফের ওই প্রাক্তন কর্মী।