অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী অভিবাসন (পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি) সংখ্যা বছরে ২০০,০০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশটি করোনা মহামারীর বড় সংকটের সময় ভিসা দেয়া কমিয়ে দিয়েছিলো, ফলে এখন দক্ষ কর্মীর ঘাটতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে প্রতি বছর প্রায় ৬৫,০০০ কর্মী এজড কেয়ার থেকে চলে গেছে
- সরকার মাইগ্রেশন ক্যাপ বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করছে এবং বছরে দুই লাখ ভিসা দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা করছে
- জবস অ্যান্ড স্কিলস সামিট ১ ও ২ সেপ্টেম্বর ক্যানবেরার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হবে
আগামী মাসে জবস অ্যান্ড স্কিলস সামিটের আগে সরকার যে কোন পরিবর্তন আনার জন্য উদার নীতি গ্রহণ করেছে।
যে খাতগুলো সীমান্ত বন্ধের কারণে মারাত্মকভাবে কর্মী সংকটে পড়েছে তার মধ্যে এজড কেয়ার বা বয়স্ক পরিচর্যা খাত অন্যতম।
কর্মী সংকট উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং এটি অবশিষ্ট কর্মীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, ফলে অনেকেই কাজ ছেড়ে যেতে শুরু করেছে।
Advertisementঅ্যাংলিকেয়ার সিডনি শাখার সিইও সাইমন মিলার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, কাজের চাপে ক্লান্ত কর্মীরা কাজ ছেড়ে দিচ্ছে ব্যাপক হারে।
“সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে প্রতি বছর প্রায় ৬৫,০০০ কর্মী এজড কেয়ার থেকে চলে গেছে’, বলেন তিনি।
তবে আরও দক্ষ অভিবাসীদের আগমন ঘটলে এই নিম্নগামীতা থামতে পারে। এবং মি. মিলার আরো বলেন যে এটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সংকট সমাধানের জন্য একটি নতুন ধরণের ভিসার প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিতও দেয়।
তিনি বলেন,”আমরা দেখতে চাই যে সরকার এই খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট ভিসা দিয়ে আমাদের সহায়তা করবে।”
এদিকে সরকার মাইগ্রেশন ক্যাপ বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করছে এবং বছরে দুই লাখ ভিসা দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা করছে বলে মনে হচ্ছে।
মিনিস্টার ফর স্কিলস এন্ড ট্রেইনিং ব্রেন্ডন ও’কনর কর্মী ঘাটতি সমাধানে এই প্রতিশ্রুতির কথা বলছেন।
তিনি বলছেন, “আমরা এই দেশে কর্মী ঘাটতি মোকাবেলা এবং দক্ষ কর্মী সরবরাহ নিশ্চিত করতে উন্মুক্ত। প্রকৃতপক্ষে ওইসিডি বা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ভুক্ত উন্নত বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মী ঘাটতি রয়েছে।
মহামারীর আগে, অভিবাসন সংখ্যা ১৯০,০০০টিতে সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল।
এই সংখ্যা ২০১৯ সালে ১৬০,০০০-এ নেমে আসে। তারপর থেকে সংখ্যাটি আর বাড়েনি।
এতে নেট মাইগ্রেশনের সংখ্যা ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। দেশ ছেড়ে যাওয়া কর্মীর সংখ্যার চেয়ে নতুন আসা অভিবাসীর সংখ্যা কমে যায়।
মিঃ ও’কনর শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ায় নতুন দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করার জন্যই নয়, যারা ইতিমধ্যেই এখানে আছেন তাদের ধরে রাখার উপরও গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন,”দুটি জিনিস: একটি দক্ষ কর্মীর তীব্র ঘাটতির কারণে এই দেশে আসতে অনুমতি দেওয়া, এবং অন্যটি অস্থায়ী ভিসাধারীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়া।”
তবে অভিবাসী শ্রমিকদের স্ট্যাটাস এবং যারা অস্থায়ী ভিসায় আছে তাদের নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রেড ইউনিয়নগুলো, যারা আন্তর্জাতিক কর্মীদের স্থানীয় কর্মীদের জায়গায় সস্তা বিকল্প হিসাবে হ্রাস না করা হয় তা নিশ্চিত করার দিকে নজর রাখে।
অস্ট্রেলিয়ান কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নের মিশেল ও’নিল ব্যাখ্যা করে বলেন,
“আমাদের প্রথম যে জিনিসটি দেখতে হবে তা হ’ল এটি দক্ষ কর্মীর ঘাটতি কিনা বা তাদের ন্যায্য মজুরি এবং উপযুক্ত কাজের পরিবেশ আছে কিনা। প্রায়ই নিয়োগকর্তারা কর্মী সংকটের কথা বলেন, কিন্তু একই সাথে আমরা জানি যে, অস্থায়ী শ্রমিকদের শোষণ করা হয় এবং অস্ট্রেলিয়াতে যে মজুরি এবং কাজের পরিবেশ দেওয়া উচিত তা দেওয়া হয় না।”
বাজেটে অভিবাসনের স্বল্পমেয়াদী প্রভাব থাকলেও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সরকার এটিকে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ হিসেবে দেখে।
আগামী মাসে, সরকার একটি জবস অ্যান্ড স্কিলস সামিট করবে, যেখানে মাইগ্রেশন ক্যাপ হবে অন্যতম প্রধান বিষয়।
সিনেটর বারবারা পকক নিশ্চিত করেছেন যে তার দল গ্রিনস এই সামিটে অংশ নেবে এবং পরামর্শ দেবে।
এদিকে বিরোধীদলীয় নেতা পিটার ডাটন একমাত্র নেতা যিনি সামিটের টেবিলে তার জন্য বরাদ্দ একটি আসন প্রত্যাখ্যান করেছেন, এবং বলেছেন যে তিনি সম্মেলনটিকে অকেজো মনে করছেন।
ন্যাশনালরা মিঃ ডাটনের সিদ্ধান্তকে তাদের জোট অংশীদারের মতামত হিসেবে সমর্থন করে প্রতিক্রিয়া জানায়, কিন্তু তাদের নেতা ডেভিড লিটলপ্রাউড প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তিনি সম্মেলনে উপস্থিত হবেন।
জবস অ্যান্ড স্কিলস সামিট ১ ও ২ সেপ্টেম্বর ক্যানবেরার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হবে।