তালেবানের সঙ্গে আফগান বাহিনীর মুহুর্মুহু সংঘর্ষে রণক্ষেত্র আফগানিস্তান। হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহ নিয়ন্ত্রণ নিতে তীব্র লড়াই চালাচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। তাদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে আফগান বাহিনী। মঙ্গলবার দেশটির জেনারেল সতর্ক করে বলেছেন, তালেবান গোষ্ঠী যদি সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হয়, তবে বৈশ্বিক নিরাপত্তায় ধ্বংসাত্মক পরিণত বয়ে আনবে।
আফগানিস্তানের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ হেলমান্দ। গত কয়েক দিন ধরে প্রাদেশিক রাজধানী লস্করগাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আফগান বাহিনী। হাজার হাজার কমান্ডো এক হয়ে লড়ছে সশস্ত্র তালেবানের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তালেবানদের পিছু হটার সংবাদ দিতে পারেনি কাবুল।
হেলামান্দে আফগান সামরিক সদস্যদের নেতৃত্ব থাকা জেনারেল সামি সাদাত জানিয়েছেন, প্রদেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকেই যাচ্ছে। সংঘাতের কারণে বেসামরিক মানুষ পালিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে। এদিন জাতিসংঘ বলেছে, সম্প্রতি প্রদেশটিতে যুদ্ধে অন্তত ১০ বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও এই সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার ধারণা সামি সাদাতের।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, সরকারি বাহিনীর অভিযানের মধ্যেই লস্কারগাহের একাধিক জেলা দখলে নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। তবে জেনারেল সাদাত আশাবাদী, তালেবানের পক্ষে শহরটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সহজ হবে না। বিবিসিকে তিনি আরও বলেন, তালেবানের বিজয় মানে বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে।
আফগানিস্তানে দীর্ঘ ২০ বছরের অভিযানের পর ফিরে যাচ্ছে ন্যাটো ও মার্কিন সেনারা। তাতেই তালেবান নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে। চলতি মাসেই বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের কার্যক্রম শেষ হতে চলছে আফগানিস্তানে।
বিবিসির খবরে বলা হচ্ছে, একসময় হেলমান্দ প্রদেশে মার্কিন ও ব্রিটিশ সামরিক অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশটি হাতছাড়া হওয়া মানে কাবুলের জন্য বড় ধাক্কা। তালেবানের উত্থানের কারণ হিসেবে সোমবার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেন, আফগানিস্তানকে বিপদে ফেলেই বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এজন্য ওয়াশিংটনকেই দায়ী করেন তিনি। তবে আগামী ৬ মাসের মধ্যেই দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ঘানি।