চীনের শাসকদল কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তারা ঘোষণা দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে তারা একটি নতুন ঐতিহাসিক সূচনা লগ্নে পৌঁছে গেছে। তাদের এই ঘোষণায় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে গত দশকের মতো এই দশকও চীনের নেতৃত্বে থাকছেন তিনি।
শুক্রবার বেইজিংয়ে চীনের মন্ত্রী ওয়াং শিয়াওহুই জানান, পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এই সপ্তাহে একটি বিরল রেজুলিউশন পাস করেছে। এতে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, শি জিনপিংয়ের মৌলিক চিন্তা ও রুপান্তরের অনুশীলন চীনকে নতুন এক যুগে নিয়ে গেছে।
এর আগে চীনে এমন তত্ত্ব লিখেছেন শুধু মাও জেদং ও ডেং শিয়াওপিং।
ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনার স্টাডিজ-এর জুড ব্ল্যানখেট বলেন, অবশ্যই শি জিনপিং নিজেকে ওই দুই নেতার সমকক্ষ হিসেবে দেখেন। আমার মনে হয় তিনি নিজেকে চীনের মৌলিক রূপান্তরমূলক নেতা হিসেবে দেখেন।
প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় কমিটি শি জিনপিংয়ের বিশাল প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। কমিটির প্রায় ৪০০ সদস্যের অনুমোদন পাওয়ায় প্রমাণিত হচ্ছে তৃতীয়বার দলের নেতৃত্ব পেতে প্রয়োজনীয় সমর্থন তার রয়েছে। ২০২২ সালের দ্বিতীয়ার্ধে নেতৃত্ব নির্বাচনের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ওয়াং বলেন, শি দেখিয়েছেন জাতি একটি নতুন ঐতিহাসিক সূচনা লগ্নে দাঁড়িয়ে আছে, অতীত পর্যালোচনা ও ভবিষ্যতে চোখ।
পার্টির প্রকাশিত নথিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের তত্ত্ব ২০৪৯ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়নের ডাক দেওয়া হয়েছে। এতে আরেকটি স্পষ্ট হয়েছে। পূর্বসুরী দুইবার নেতৃত্বে থাকার যে প্রথা তৈরি করেছিলেন তিনি তা ভেঙে তৃতীয় মেয়াদেও নেতা হতে পারেন।
ঐতিহাসিক এই রেজুলিউশন পাস হওয়ার আগেই শি পার্টিতে অনেকগুলো মাইলফলক অর্জন করেছেন। ২০১৬ সালে তিনি নিজেকে দলের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১৭ সালে পার্টির চার্টারে নিজের নাম লেখান এবং ২০১৮ সালে দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকার সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা বাতিল করেন।
সিডনিভিত্তিক লউয়ি ইন্সটিটিউট-এর সিনিয়র ফেলো রিচার্ড ম্যাকগ্রেগর বলেন, শি এখন চীনের অভিজাত নেতাদের কাতারে। যে নেতারা শুধু দল পরিচালনা করেননি, বৃহত্তর ব্যবস্থায় তারা সাধুতুল্য। আগামী বছরের নেতৃত্বে বদল দীর্ঘ পথে শি জিনপিংকে কোন ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে সেটির ইঙ্গিত পেতে পারে বিশ্ব।