Home Bangladesh চাইলেই শর্টকোড নম্বর পাওয়া যাবে না, কিন্তু কেন?

চাইলেই শর্টকোড নম্বর পাওয়া যাবে না, কিন্তু কেন?

48
0

পাঁচ ডিজিটের টেলিফোন নম্বর শর্টকোড হিসেবে পরিচিত। প্রচলিত টেলিফোন নম্বরের পরিবর্তে কম ডিজিট-সম্পন্ন হওয়ায় শর্টকোডের ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা তাদের প্রয়োজনে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে আবেদন করে এই নম্বর পেয়ে থাকে। এখন এই প্রক্রিয়ায় লাগাম টানতে যাচ্ছে বিটিআরসি।

এখন চাইলেই আর শর্টকোড পাওয়া যাবে না। আবেদন প্রাপ্তির মধ্যে অধিকতর যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে শর্টকোড বরাদ্দ দেওয়ার জন্য কিছু শর্তারোপ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি অনেক স্থানীয় প্রতিষ্ঠান (স্থানীয় ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক ও ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠান) শুধু তাদের প্রাতিষ্ঠানিক ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য শর্টকোড নম্বর বরাদ্দের আবেদন করছে। বিধিমালা অনুযায়ী, এসব আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শর্টকোড বরাদ্দ প্রদানে কোনও বাধা না থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানের কোনও নেশনওয়াইড কল হিট নেই। এদের সেবাগ্রহীতা শুধু একটি নির্দিষ্ট শ্রেণিভিত্তিক। কিন্তু প্রচলিত মোবাইল নম্বর বা অন্যান্য লংকোড নম্বরের পরিবর্তে  শর্টকোড নম্বর বরাদ্দের মূল উদ্দেশ্য— দেশের জনসাধারণের জন্য বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি তথ্যসেবা প্রাপ্তি সহজ করা। সীমিত ও স্থানীয় গ্রাহক শ্রেণির কাছে কোনও নির্ধারিত সেবা প্রদানের জন্য শর্টকোড নম্বর বরাদ্দের বিষয়টি শর্টকোডের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

জানা গেছে, জাতীয় নাম্বারিং প্ল্যান-২০১৭ ও শর্টকোড বরাদ্দকরণ নীতিমালা-২০২০-এর আলোকে বিটিআরসি থেকে শর্টকোড বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে ৫ ক্যাটাগরিতে ৫২২টি শর্টকোড বরাদ্দ দেওয়া আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিটিআরসির কাছে বরাদ্দ উপযোগী শর্টকোড নম্বর রয়েছে ১ হাজার ২৪৩টি। এছাড়া ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত নম্বরের সংখ্যা ৬ হাজার ৫০৯টি। কয়েকটি সিরিজে (বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা) ৫০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর এরইমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়ে গেছে।

বিটিআরসি মনে করে, বর্তমানে দেশে বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন খাতে লক্ষাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে শর্টকোড বরাদ্দ করা সম্ভব নয়, যৌক্তিকও নয়। শর্টকোড একটি সীমিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ। ফলে এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে আরও  শর্তারোপ করা জরুরি।

জানা গেছে, এখন থেকে শর্টকোড নম্বর নিতে হলে আবেদনকারীকে কিছু শর্তপালনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে— যেসব প্রতিষ্ঠানের সেবা আপামর জনসাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বরং একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির গ্রাহককেন্দ্রিক, তাদের দেশব্যাপী সেবা প্রদানের ব্যবস্থা থাকলেও শর্টকোড বরাদ্দকরণ নীতিমালা-২০২০ অনুযায়ী, ক্যাটাগরি- ‘ই’ এর আওতায় চলমান নম্বর সিরিজ থেকে নম্বর বরাদ্দ নিতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হতে হবে। দেশব্যাপী সেবা প্রদান বা সক্রিয় গ্রাহক থাকার প্রমাণাদি আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে। যেসব ভৌত সেবা প্রদানকারী (ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, রিয়েল এস্টেট ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠান শর্টকোড বরাদ্দ প্রাপ্তিতে আগ্রহী, তাদের কল সেন্টার বা গ্রাহক ব্যবস্থাপনা ও যথেষ্ট নেশনওয়াইড কল হিটের প্রমাণ হাজির করতে হবে। কাস্টমার কেয়ার সার্ভিসের জন্য শর্টকোড বরাদ্দ প্রাপ্তিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে কলসেন্টার বা গ্রাহক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দৈনিক-ভিত্তিতে কমপক্ষে ৩০০ কল প্রাপ্তির প্রমাণ জমা দিতে হবে।

এই বিষয়টি কমিশনের ২৬৭তম বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস ও স্পেক্ট্রাম বিভাগ) মতামত নিয়ে কমিশনের পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। ওই বৈঠকে আরও যেসব শর্তের কথা বলা হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে— শর্টকোডের মাধ্যমে আইভিআর-ভিত্তিক কল সেন্টার পরিচালনার ক্ষেত্রে চার্জিং সিস্টেম ও সেবা প্রদানের ব্যাপ্তি সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে সন্তোষজনক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শর্টকোড বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। শর্টকোড একটি সীমিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ, ফলে এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে একই মালিকানাধীন একাধিক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শর্টকোড বরাদ্দ নিরুৎসাহিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে উপযুক্ততা যাচাই সাপেক্ষে একাধিক শর্টকোড বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা সীমিত রাষ্ট্রীয় একটি সম্পদ। ফলে সেটা মাথায় রেখেই বরাদ্দ দেওয়া হবে। তাই শর্টকোড বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে আগের নিয়ম থেকে সরে আসতে হচ্ছে।’ তিনি জানান, যে হারে আবেদন আসছে, তাতে করে এটাও দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। সে কারণে ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবেই এ ধরনের শর্ত দেওয়া হচ্ছে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here