নভেম্বর ২০১৯ সালে চালু করা, গ্লোবাল ট্যালেন্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোগ্রামটি অস্ট্রেলিয়ার উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি অর্থনীতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য কিছু নির্বাচিত খাতের উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের আকর্ষণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- গ্লোবাল ট্যালেন্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোগ্রাম কোনও পয়েন্ট-টেস্টেড ভিসা নয় এবং আবেদনকারীদের ইংরাজীতে-দক্ষতা পরীক্ষা এবং আনুষ্ঠানিক স্কীল এসেসমেন্ট প্রক্রিয়ার মধ্যেও যেতে হবে না।
- এই গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার দুটি ট্র্যাক রয়েছে, একটি হলো সাম্প্রতিক পিএইচডি স্নাতকদের এবং অন্যটি হলো যাদের নিজ পেশায় অসাধারণ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
- ব্যতিক্রমী এবং অসামান্য সাফল্যের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রেকর্ড ছাড়াও একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই নমিনেটর থাকতে হবে যিনি তাদের কাজের দক্ষতা এবং কৃতিত্বের স্বীকৃতি দেবেন।
ওয়ার্ক ভিসা আইনজীবীদের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রিন্সিপাল অভিবাসন আইনজীবী ক্রিস জনস্টন ব্যাখ্যা করে বলেন, “গ্লোবাল ট্যালেন্ট-এর জন্য ১০টি সেক্টর অন্তর্ভুক্ত করতে ভিসা প্রোগ্রামটি আরও বাড়ানো হয়েছে। আমি মনে করি উচ্চ-প্রযুক্তি সম্পর্কিত ইন্ডাস্ট্রি যেমন সার্কুলার অর্থনীতির মতো নতুন ইন্ডাস্ট্রিকে অন্তর্ভুক্ত করতে এটি করা হয়েছে।”
এই প্রোগ্রামটির প্রচার এবং সম্ভাব্য আবেদনকারী এবং ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে জড়িত করতে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শহর, যেমন লন্ডন, সাংহাই, সিঙ্গাপুর এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে গ্লোবাল ট্যালেন্ট অফিসার নিয়োগ দিয়েছে।
ভবিষ্যতে উচ্চ দক্ষতার প্রার্থীদের আকৃষ্ট করতে যে শিল্পগুলোর ওপর অস্ট্রেলিয়া সরকারের দৃষ্টি সেগুলো হচ্ছে:
- রিসোর্সেস,
- কৃষি-খাদ্য এবং এগ্রি-টেক,
- এনাৰ্জি,
- হেলথ ইন্ডাস্ট্রি,
- প্রতিরক্ষা,
- অ্যাডভান্সড ম্যানুফ্যাকচারিং এন্ড স্পেস,
- সার্কুলার অর্থনীতি,
- ডিজি-টেক,
- অবকাঠামো এবং পর্যটন,
- আর্থিক পরিষেবা এবং ফিন-টেক; এবং
- শিক্ষা।
বিগ ফোর পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার, সুভদীপ ব্রহ্মার অসাধারণ পেশাদার সাফল্য রয়েছে।
তিনি বলেন, “এই গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার দুটি ট্র্যাক রয়েছে, একটি হলো সাম্প্রতিক পিএইচডি স্নাতকদের এবং অন্যটি হলো যাদের নিজ পেশায় অসাধারণ অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি গত ১১ বছর ধরে ম্যানেজেমেন্ট কনসাল্টিং করছি, এবং তার মধ্যে গত পাঁচ বা ছয় বছর ডিজিটাল কনসাল্টিং করেছি, সুতরাং আমার এই প্রোফাইলের ভিত্তিতেই আমি এই ভিসার জন্য আবেদন করেছি।”
ব্যতিক্রমী এবং অসামান্য সাফল্যের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রেকর্ড ছাড়াও একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই কারো দ্বারা মনোনীত হতে হবে যিনি তাদের কাজের দক্ষতা এবং কৃতিত্বের স্বীকৃতি দেবেন।
মনোনয়ন দাতাকে অবশ্যই একজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে যিনি আবেদনকারীর মতো একই পেশায় সাফল্য অর্জন করেছেন। কোন অস্ট্রেলিয়ান একটি সংস্থাও গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার জন্য ভিসা আবেদনকারীকে মনোনীত করতে পারে।
তবে মিঃ ব্রহ্মা বলেছেন যে লোকেরা অফশোর আবেদন করছেন তাদের পক্ষে নমিনেটর খুঁজে পাওয়া চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
তিনি বলেন, “আমার পক্ষে এটি কিছুটা সহজ ছিল কারণ আমার অস্ট্রেলিয়ায় নেটওয়ার্ক রয়েছে। তবে যখন কেউ অস্ট্রেলিয়ার বাইরে, তাদের জন্য নমিনেটর খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন হতে পারে। ডিজিটাল এবং এ সম্পর্কিত পেশায় মনোনয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়ান কম্পিউটার সোসাইটির মতো অর্গানাইজেশনগুলোতে অনুরোধ জানাতে পারে, যা অস্ট্রেলিয়ার বাইরের প্রার্থীদের জন্য একটি বিকল্প।”
গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা নভেম্বর ২০১৯ সালে ৫০০০ ভিসা প্লেস নিয়ে শুরু হয়েছিল। কিন্তু ২০২০-২১ পার্মানেন্ট মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের জন্য আছে ১৫,০০০ প্লেস।
তবে অভিবাসন আইনজীবি ক্রিস জনস্টন উল্লেখ করেছেন যে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স সম্প্রতি যোগ্যতার মানদণ্ড কমিয়ে এনে কিছু পরিবর্তন করেছে।
তিনি বলেন, “২০ শে জানুয়ারী ২০২১ সালের পর মাস্টার্স বাই কোর্সওয়ার্ক, মাস্টার্স বাই রিসার্চ এবং স্নাতক সম্মানসহ ডিগ্রিধারীরা শুধু তাদের শিক্ষার ভিত্তিতে আর যোগ্য নন।”
এই নীতির পরিবর্তনের কারণে আগ্রহীরা সমস্যায় পড়বেন, বিশেষ করে যারা তাদের এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারির আগে জমা দিয়ে এই ভিসার আবেদনের জন্য আমন্ত্রণ পায়নি।
ভিসা গ্র্যান্টের মানদণ্ডের অংশ হিসাবে, ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স বিবেচনা করে যে কোন সম্ভাব্য আবেদনকারীর আয়ের থ্রেশোল্ড বা আয় সর্বনিম্ন কত। এই অর্থবছরের জন্য এটি বছরে ১৫৩,০০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুভদীপ ব্রহ্মা বলেন যে তিনি আয়ের মানদণ্ডটি পূরণ করেননি, তবে উচ্চ-আয়ের যে থ্রেশোল্ড ধরা হয়েছে তার চেয়ে বেশি উপার্জনের সম্ভাবনার প্রমাণ জমা দিয়েছেন।
ক্রিস জনস্টন বলেন যে নীতিমালার আওতায় গ্লোবাল ট্যালেন্ট অফিসাররা সরকার কর্তৃক উচ্চ আকাঙ্ক্ষিত পেশাগুলোর জন্য আবেদনকারীদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে পারে।
প্রোগ্রামটি পিএইচডি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য উন্মুক্ত। মিঃ জনস্টন বলেন যে নবীন গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে যারা বার্ষিক বেতন ১৫৩,৬০০ ডলার পান না তাদের আবেদনে এমন কিছু প্রমান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যাতে তারা বোঝাতে পারে যে ভিসা পাবার পরে এই পরিমাণ উপার্জনের সম্ভাবনা তাদের রয়েছে।
এখানে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে গ্লোবাল ট্যালেন্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোগ্রাম কোনও পয়েন্ট-টেস্টেড ভিসা নয় এবং আবেদনকারীদের ইংরাজীতে-দক্ষতা পরীক্ষা এবং আনুষ্ঠানিক স্কীল এসেসমেন্ট প্রক্রিয়ার মধ্যেও যেতে হবে না।
সুভদীপ ব্রহ্মা মাত্র দুই মাসের মধ্যে তাঁর পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পেয়েছিলেন।
তিনি বলেন যে এই প্রোগ্রামের প্রক্রিয়াটি এত দ্রুত হয়েছিল যে তিনি অবাক হয়েছিলেন।
তিনি “আমি লিংকডইনে বেশ কয়েকজন গ্লোবাল ট্যালেন্ট অফিসারদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা আমার প্রশ্নের বেশ ভালো সাড়া দিয়েছিল। যাদের তাদের পেশায় আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে তাদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করা আকর্ষণীয় হতে পারে। অভিজ্ঞতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ভিসা পেতে এর চেয়ে ভাল এবং মর্যাদাপূর্ণ পথ আর হতে পারে না।”
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
এখানে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন বিষয়ে সাধারণ তথ্য এবং নির্দিষ্ট কোন পরামর্শ নয়। কেউ যদি আরো প্রাসঙ্গিক এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে চান তাহলে একজন রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করুন।
আপনি কীভাবে একজন মাইগ্র্যাশন এজেন্ট খুঁজে পাবেন সেজন্য ভিজিট করুন: https://www.mara.gov.au/using-an-agent/using-a-registered-migration-agent
আরো তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: অস্ট্রেলিয়া গভর্নমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স: immi.homeaffairs.gov.au