আফগানিস্তান ইস্যুতে জরুরি বৈঠকে বসছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭। আজ মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকে কাবুলের তালেবান শাসকদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনা করবেন জি-৭-এর নেতারা।
বৈঠক পরিচালনা করবে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইতোমধ্যেই তালেবান ইস্যুতে একাধিক বিষয় সামনে এনেছেন। জনসন স্পষ্ট করেছেন, তার দেশ আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তালেবানকে মেনে নিতে চায় না। দলটির বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তাবও করেছেন তিনি। জি-৭ বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যাবতীয় সামরিক উপস্থিতি সরিয়ে নিতে চায় হোয়াইট হাউস। এর অংশ হিসেবে উদ্ধারকাজ আরও জোরদার করা হয়েছে।
জো বাইডেন বলেছেন, যেভাবে আফগান নাগরিকরা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন, তা দেখে তার কষ্ট হচ্ছে। মনে যন্ত্রণা হচ্ছে। যেসব মানুষ মার্কিন সংস্থাগুলোকে সাহায্য করেছিল, এমনকি যারা ন্যাটোর বিভিন্ন সংস্থাকে সাহায্য করেছে, তাদের যাতে দ্রুত আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা যায় সেজন্য যাবতীয় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এখন দূতাবাসের কাজ চালাচ্ছে। সেখানে আফগান নাগরিকদের অতীত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে তাদের ভিসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বাইডেন জানিয়েছেন, তালেবানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে মার্কিন বাহিনী। সবাইকে যাতে সুষ্ঠুভাবে বিমানবন্দর পর্যন্ত আনা যায়, তার জন্যই যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তালেবান মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি আবেদন রেখেছেন। তার বক্তব্য, এই মুহূর্তে আফগানিস্তানের যা পরিস্থিতি, তাতে ৩১ আগস্টের মধ্যে সবাইকে উদ্ধার করা অসম্ভব। ফলে মার্কিন বাহিনী যেন আরও কিছুদিন সেখানে থাকে। বস্তুত, যুক্তরাজ্যেরও এক হাজার সেনা কাবুল বিমানবন্দরে আছে। তারাও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। কিন্তু মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নিলে ন্যাটোর অন্য দেশগুলোও তাদের সামরিক উপস্থিতি সরাতে বাধ্য হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনসন চাইছেন, জি-৭-এর বৈঠক থেকে তালেবানের বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে। তবে ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তালেবান কী নীতি নেয়, সেটি দেখেই তারা একটি সিদ্ধান্ত উপনীত হতে চায়। সব মিলিয়ে বৈঠকে যে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উত্তপ্ত আলোচনা হবে, কূটনীতিকদের কাছে তা স্পষ্ট।