অস্ট্রেলিয়া নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলেন- মো. সাইমুন ইসলাম (২৬) ও আশফাকুজ্জামান খন্দকার (২৬)।
তবে প্রতারণার মূল কলকাঠি যিনি নাড়েন, ৩৫ বছর বয়সী সেই উম্মে ফাতেমা রোজীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি এখনও। তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার আশা করছে সিআইডি।
আজ (রোববার) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন। রোজী কিভাবে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন তার বিস্তারিতও উঠে আসে এই সংবাদ সম্মেলনে।
সিআইডির ডিআইজি বলেন, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ৩৫ বছর বয়সী উম্মে ফাতেমা রোজী বাংলাদেশি পুরুষদের টার্গেট করে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদ ফেলেন। এরপর দেশে এসে আস্থা অর্জন করেন। তারপর ছেলের পরিবারকে অস্ট্রেলিয়া নেওয়ার প্রলোভন দেখান। বাংলাদেশে তার প্রতারক বন্ধুরা ওই টার্গেটকে জাল ভিসা ও টিকেট বানিয়ে চম্পট হয়ে যান। এভাবেই দীর্ঘদিন চলছিল তাদের প্রতারণা।
সিআইডির পদস্থ এ কর্মকতা জানান, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ৪৭ বছর বয়সী এক আইনজীবী রোজীর ফাঁদে পা দিয়ে ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা হারিয়েছেন। তিনি মামলা করেছেন রোজীর বিরুদ্ধে। এরপরই সামনে আসে তার প্রতারণার ঘটনা।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, রোজী অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশন কনস্যুলার জেনারেল হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দেন। এছাড়াও তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের কাছ থেকে পুরস্কৃত হয়েছেন বলে ছবি দেখান। এতে করে তার ওপর আস্থা বাড়ে মানুষের। অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশনমন্ত্রী এলেক্স হাউকির সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও জানান। এরপর ধাপে ধাপে কাগজপত্র ও ভিসার কথা বলে টাকা নিতে থাকেন। এভাবে তার পাতা ফাঁদে পড়ে একাধিক বাংলাদেশি প্রতারিত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এমন ফাঁদে পড়ে পরিবারের আট সদস্যসহ অস্ট্রেলিয়ায় যেতে চেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। এরপর দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা রোজীর অ্যাকাউন্টে দেন। এরপর কাগজপত্র ও ভিসা হাতে পেয়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখতে পান সবগুলোই ভুয়া এবং জাল। এভাবে প্রতারণা করে রোজী একাধিক মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।