আসন্ন ফেডারাল নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্যে সতের মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় নাগরিকের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাচন পরিচালনার জন্যে আমাদের একটি স্বাধীন সংস্থা রয়েছে, সেটি হচ্ছে এইসি বা অস্ট্রেলিয়ান ইলেকটোরাল কমিশন। ভোট প্রদানের জন্যে যোগ্য সমস্ত নাগরিক যেন ফেডারাল সরকার গঠনে ভূমিকা রাখতে পারেন, অস্ট্রেলীয় নির্বাচন কমিশন সেটিই নিশ্চিত করে। এই সপ্তাহের সেটলমেন্ট গাইডে থাকছে নির্বাচনে ভোট কী করে দিতে হয়।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:
- এইসি-র ওয়েবসাইটে নির্বাচনী এলাকা এবং ভোটকেন্দ্রের তথ্য দেওয়া থাকবে
- নির্বাচনের দিন এবং তার পূর্বে আগাম ভোট, ডাকযোগে এবং টেলিফোনে ভোটসহ বিভিন্ন উপায়ে ভোট দেওয়া যাবে
- বাংলা ও ইংরেজিসহ অন্যান্য অনেক ভাষায় ভোট সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া রয়েছে
- যাদের প্রয়োজন হবে এইসি টেলিফোনে অনুবাদকের মাধ্যমে তাদেরকে ভোট প্রদানে সাহায্য করবে
অস্ট্রেলীয় নির্বাচন কমিশন বা এইসি আশা করছে নির্বাচনের দিন প্রতি ঘন্টায় প্রায় এক মিলিয়ন ভোটার সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ভোটকেন্দ্রগুলোয় গিয়ে ভোট দেবেন। ভোটার তালিকায় নাম থাকা সকল নাগরিকের জন্যে ভোট দেয়া বাধ্যতামূলক।38/html/container.html
Voting CentreAEC
এইসি মুখপাত্র জেস লিলি বলেন, সবাইকে তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রার্থীদের জন্যে ভোট দিতে হবে।
নির্বাচনের দিন এইসি হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্র পরিচালনা করবে। স্থানীয় স্কুল ও গির্জাগুলো সাধারণত ভোটকেন্দ্র হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়। এই সম্পর্কিত সকল তথ্য এইসি-র ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বিভিন্ন ভাষায় এ সম্পর্কিত নির্দেশনাবলী ও ভোটারদের অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন এইসি-র আরেক মুখপাত্র ইভান ইকিন-স্মিথ।
এইসি-র মোবাইল ভোটিং টিম আবাসিক সেবাকেন্দ্র এবং দূরবর্তী এলাকাগুলোয় গিয়ে ভোট সংগ্রহ করবে যেন একজন ভোটারও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বাদ না পড়েন।
Remote PollingAEC
যেসকল ভোটার নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে যেতে অপারগ হবেন, তারা অন্য উপায়ে ভোট প্রদান করতে পারবেন।
মিজ লিলি বলেন, ডাকযোগে ভোটের ব্যালট পেপার পেতে নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই এইসি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
কোভিডের কারণে যারা আইসোলেশনে থাকবেন, তারা এইসি-র টেলিফোন ভোটিং সিস্টেম ব্যবহার করে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচনের ঘোষণার পরে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
নির্বাচনের দিন যারা অন্য স্টেটে অবস্থান করবেন, তারাও ডাকযোগে অথবা অন্য স্টেটের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
এমনকি অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থাকলেও ভোট দেওয়া সম্ভব। এ সম্পর্কিত নির্দেশনাবলী এইসি-র ওয়েবসাইটে রয়েছে। প্রত্যেকের নিজস্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে ভোটের পদ্ধতি জানিয়ে দেয়া আছে এই সাইটে। বিদেশে অবস্থিত কিছু কিছু অস্ট্রেলীয় হাই-কমিশনও ভোটকেন্দ্র হিসেবে সাময়িকভাবে কাজ করে।
ভোট দিতে গেলে অনেক সময়ই দেখা যায় যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকেরা কেন্দ্রের বাইরে ভোট সম্পর্কিত নানারকম তথ্য বিতরণ করছে। নির্বাচন বিশ্লেষক উইলিয়াম বাউয়ি বলেছেন, তাদের আপনাকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ আপনি কোনওমতেই দেবেন না।
ফেডারাল নির্বাচনে আপনি ভোট দেবেন আপনার স্থানীয় প্রতিনিধি নির্বাচন করতে।
ভোটারদের দুইটি করে ব্যালট পেপার দেওয়া হবে, একটির রঙ সবুজ, অন্যটির সাদা।
Ballot paperAEC
সবুজ ব্যালট পেপার ব্যবহার করে আপনার নির্বাচনী এলাকা হতে একজনকে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের প্রতিনিধি হিসেবে ভোট দেওয়া যাবে। এই প্রতিনিধি তখন সংসদের নিম্নকক্ষ বা লোয়ার হাউজে যোগ দেবেন। উইলিয়াম বাউয়ি বলেন, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করতে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সর্বমোট ১৫১টি আসন রয়েছে।
নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক দল বা কোয়ালিশনের দলনেতাই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
সবুজ ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্যে সবচেয়ে পছন্দের প্রার্থীর পাশে ‘১’ লিখতে হবে, তারপরে দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থীর পাশে ‘২’, এভাবে সবগুলো বক্সে পছন্দের ক্রমানুসারে নম্বর পূরণ করে যেতে হবে।
আর সাদা ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হয় সিনেটের ৭৬টি আসনের একজনকে নির্বাচিত করার জন্যে, যেটিকে উচ্চকক্ষ বা আপার হাউজও বলে। আপনার নিজের স্টেট বা টেরিটরি হতে একজনকে সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত করার জন্যে আপনাকে ভোট দিতে হবে। উইলিয়াম বাউয়ি বলেন, সিনেট ভোটের পদ্ধতি খানিকটা আলাদা।
সাদা ব্যালট পেপার আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে কারণ স্টেটের সব প্রার্থীকে সেখানে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।
এই ভোটিং পদ্ধতিকে বলা হয় ‘অগ্রাধিকারমূলক ভোট’ বা প্রেফারেন্সিয়াল ভোটিং। উইলিয়াম বাউয়ি বলেন, পছন্দের ক্রমানুসারে নম্বর লিখে ভোট দেওয়াতে ভোট গণনার সময় এটি আরও বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
প্রতিটি ভোটারকে ভোটের সকল নির্দেশনাবলী ঠিকমতন অনুসরণ করা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও কারণে ব্যালট পেপার সঠিকভাবে পূরণ করা না হলে আপনার ভোটটি ‘ইনফর্মাল ভোট’ বা বাতিল হিসেবে গণ্য হওয়ার আশংকা রয়েছে।
ইনফর্মাল ভোটের উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি ব্যালট পেপারে বক্সগুলিতে নম্বরের পরিবর্তে টিক চিহ্ন বা ক্রস চিহ্ন দেয়া হয়, অথবা সেখানে যদি এমন কিছু লেখা হয় যার ফলে ভোটারের পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে, তখন এগুলিকে ইনফর্মাল ভোট হিসেবে গণনা করা হবে।
While queuing at your polling centre you might see a fundraising stall selling sausages in bread. This is fondly known as the ‘democracy sausageAAP Image/James Ross
সকল নাগরিকের ভোট প্রদান বাধ্যতামূলক। কোনও কারণে ভোট দিতে ব্যর্থ হলে এইসি আপনার পরিস্থিতি যাচাই করে বিবেচনা করে দেখবেন সেটি অনিবার্য কারণে হয়েছে কিনা। যেমন ধরা যাক, এইসি ধারণা করছে বিদেশে অবস্থান করা অনেক নাগরিকই যুক্তিসঙ্গত কারণে ভোট দিতে সক্ষম নাও হতে পারেন।
এইসি মুখপাত্র ইভান ইকিন-স্মিথ বলেন, ভোট প্রদানে ব্যর্থ হলে আর্থিক জরিমানা করা হতে পারে।
যদিও অর্থ নয় বরং ভোট প্রদানে ব্যর্থতার সতিকারের ক্ষতি হল সরকার গঠনে নিজের মত দেয়ার সুযোগ হারানো। তাই ভালমতন খোঁজখবর করে সঠিক তথ্য জেনে নিয়ে ভোট দেওয়াই উত্তম।
ভোট সম্পর্কিত তথ্য ও নির্দেশনাবলীর জন্যে দেখুন aec.gov.au অথবা কল করুন 13 23 26
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:
- এইসি-র ওয়েবসাইটে নির্বাচনী এলাকা এবং ভোটকেন্দ্রের তথ্য দেওয়া থাকবে
- নির্বাচনের দিন এবং তার পূর্বে আগাম ভোট, ডাকযোগে এবং টেলিফোনে ভোটসহ বিভিন্ন উপায়ে ভোট দেওয়া যাবে
- বাংলা ও ইংরেজিসহ অন্যান্য অনেক ভাষায় ভোট সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া রয়েছে
- যাদের প্রয়োজন হবে এইসি টেলিফোনে অনুবাদকের মাধ্যমে তাদেরকে ভোট প্রদানে সাহায্য করবে