নব্বই দশকের গোড়া থেকে শুরু করে, অস্ট্রেলিয়ায় দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মাঝে অর্থনীতি বিষয় নিয়ে পড়ার হার প্রায় ৭০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সে সময় এই কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ এবং নারী শিক্ষার্থীর অনুপাত সমান থাকলেও, এখন আর তা নেই। অর্থনীতি পড়ুয়াদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা এখন ছেলেদের প্রায় অর্ধেক।
রিজার্ভ ব্যাংকের নতুন একটি প্রতিবেদন বলছে, সংখ্যার এই অসামঞ্জস্যতা সম্ভবত ছেলে ও মেয়েদের আত্মবিশ্বাসের পার্থক্যের কারণে হতে পারে।
রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর ফিলিপ লাউয়ি মনে করেন, এই সমস্যার মূল কোথায় তা খতিয়ে দেখা উচিৎ।
সিডনির বারউড গার্লস হাই স্কুলের অর্থনীতির শিক্ষক জুলিয়া আলভারাডো এই সমস্যা সমাধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁর স্কুলের শিক্ষার্থীদের তিনি অর্থনীতি নিয়ে পড়তে উৎসাহিত করছেন।
আর সুখবর হচ্ছে, তাঁর উৎসাহ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে অন্য অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
ছাত্রীরাও জুলিয়ার দেয়া শিক্ষা ধরে রাখছে নিজেদের মধ্যে।
তাঁর এক শিক্ষার্থী জিনেট লিম আইন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়, তবে তার সঙ্গে অর্থনীতিকেও বিষয় হিসেবে যুক্ত রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া বা আরবিএ-র এক জরিপে দেখা গেছে যে নারী শিক্ষার্থী এবং সুবিধাবঞ্ছিত শিক্ষার্থীদের ভেতর অর্থনীতি বুঝতে পারা ও কাজে লাগানোয় আত্মবিশ্বাস সাধারণত অনেক কম।
আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সিনিয়র লেকচারার লিওনোরা রিসে বলেন, এই ব্যাপারটি খুবই উদ্বেগজনক।
তবে আরবিএ-র গবেষণায় এও বলা হয়েছে যে, সামনে অনুসরণযোগ্য কাউকে পেলে নারী শিক্ষার্থীরা আরও বেশি করে অর্থনীতি বিষয়ক পড়াশোনা ও পেশা বেছে নিতে উৎসাহী হবে।
জো মাস্টারস্ কর্মজীবনে একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেছেন, এবং এ বিষয়ে লিঙ্গবৈচিত্রের অভাব যে আসলেই সমস্যা তৈরি করতে পারে তা স্বীকার করেছেন।
তিনি এখন অস্ট্রেলীয় ফান্ড ম্যানেজার ব্যারেনজোয়ির শীর্ষ অর্থনীতিবিদ।
এবং তাঁর জন্যে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে সামাজিক প্রভাব।
আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লিওনোরা রিসে বলেন, শিক্ষার এই ধারাটি সম্পর্কে লোকের মধ্যে অনেকই ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন অর্থনীতি হচ্ছে শুধুই টাকা-পয়সার হিসাব। কিন্তু তা ঠিক নয়।
জো মাস্টারস্ বলেন, অর্থনীতি পরিবেশ থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামো পর্যন্ত সব বিষয়ই শেখাতে পারে। এই বিষয়ের দক্ষতা অন্যান্য বিষয়েও কাজে লাগানো যায়।
এবং কেউ যদি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যাংক অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাংকে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চায়, আরবিএ-র বিদায়ী গভর্নর স্বয়ং এ ব্যাপারে নারীদের খুবই উৎসাহ দিচ্ছেন।